Saturday 6 June 2020

.তোমার ঘরে বাস  করে মন কয়জনা। 

সম্পর্ক এর মতো জটিল অঙ্ক আর বুঝি নেই। জীবনের এই নদীতে সম্পর্কের জোয়ার-ভাঁটা খেলে চলে আশ্চর্য ভাবে। কখনো এই সম্পর্ক মানুষকে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে শেখায় কখনো বা কোমর ভেঙে দেয়। এই সকল সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন সমীকরণ হলো নারী-পুরুষের সম্পর্ক। এক্ষেত্রে নারী হন স্বাভাবিক নির্ধারক।  নারীই নির্ধারণ করেন  তার মনে কোন পুরুষের প্রবেশাধিকার আছে.। পুরুষ চাইলেই নারীমন জয় করতে পারে না । পুরুষের প্রতি নারীর সাহচর্য,ভালোবাসা,প্রেম ,অপেক্ষা সবই খুব সুনিপুন ভাবে একজন পুরুষ কে  নারী পর্যবেক্ষন করে তবেই বিচার করেন।

নারী দৃঢ়  , আর পুরুষ গাম্ভীর্য প্রদর্শন করে । পুরুষ যত আস্ফালনই করুক না কেন, অবশেষে দৃঢ়চেতা নারীর কাছে হার মানতেই হয়। জল নরম কিন্তু কঠিন পাথরকেও ফাটিয়ে দেয় তার অবিরাম ধারা। নারীর দৃঢ়চেতা মনোভাবই  তাঁর শক্তি। সহ্য ক্ষমতা  তাঁর  অস্ত্র। তাই  এই পুরুষ শাসিত সমাজে নারী বাইরে কিছুটা পরাধীন হলেও- অন্তরে সে স্বাধীন। পুরুষ যত বজ্রগম্ভীরই হোক না  সারাজীবন নারীর শাসনে(সাহচর্যে) থাকতে চায় । মা-এর শাসন শেষ হলে শুরু হয় প্রেমিকার  শাসন। নারীর শাসন ছাড়া পুরুষের জীবন উশৃঙ্খল , অবাধ্য । তাই পুরুষের কাছে নারী হলো তার  বুকের পাঁজরের  হাড় (সুরক্ষা প্রাচীর)। পাঁজরের হাড়ের বক্রতা সহজাত , এগুলি সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন আমাদের হৃদপিন্ড কে সুরক্ষা দেবার জন্য। একে ঋজু  করতে ভাবনাতীত , ভেঙে গেলে পুরুষের হৃদয় অরক্ষিত হয়ে যায়। পুরুষ হৃদয় সুরক্ষিত থাকে তাঁর কাছে, আগলে রাখে সে।

ইতিহাস সাক্ষী প্রথমে ছিল মাতৃতান্ত্রিক সমাজ। মাতৃতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের গুরুত্ব তেমন ছিল না। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ বলতে বোঝায় যেখানে পরিবারের দায়িত্ব থাকে একজন নারীর উপর এবং বংশের ধারাও নির্ধারিত হয় নারীর দিক থেকে৷ মোটের উপর সম্পদের দায়িত্বও মা থেকে মেয়ের উপর বর্তায় এবং বিয়ের পর পুরুষ নারীর ঘরে চলে যান৷ তবে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব থাকে পুরুষের কাঁধে৷ আর তারা এটাকে বিবেচনা করে ক্ষমতার সুষম বণ্টন হিসেবে। তবে সময়ের সাথে সাথে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায়ও পরিবর্তন আসলো ৷ জীবনধারণের অন্যান্য সুযোগের চাপ ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পুরুষদের বাঁধার মুখে মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা গুরুত্ব হারালো  বলে মনে করেন  ইতিহাসবিদরা ৷এলো পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা।  শুরু হলো যৌনশাসন। পুরুষশাসিত  সমাজে পুরুষরা আবিষ্কার করল পুরুষ সর্বেসর্বা  ও নারী দাসী । পুরষতন্ত্র থেকে উদ্ভূত হলো পুরুষশাসিত ধর্ম, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান। পুরুষ  পেলো সাাাজিক ও রাজনীতিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা।  পুরুষ হয়ে  উঠলো  সমাজসংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রক, নির্ধারক । পুরুষ শাসিত ক্ষমতায় সমাজ গেলো বদলে ।

একজন নারী পুরুষের কাছে শুধুই যৌনতৃপ্তি কখনোই চায় না । নারী চায় পুরুষের প্রেম, সাহচর্য । মৈথুন, নারীর কাছে পুরুষের মতো একান্ত প্রয়োজনীয় নয়। নারী প্রেমের জন্য অপেক্ষা করে আর পুরুষ অপেক্ষা করে কামের জন্য। কামার্থ পুরুষ ব্যর্থ হয় নারীকে তাঁর  মতো করে "প্রেমজ্ঞাপনে"। শুরু হয় এক আশ্চর্য Conflict.  এর শাস্তি পায় "সম্পর্ক"  । প্রেমের অভাবে নারী রূঢ় হয়ে উঠে। পুরুষ নারীর রৌদ্রমূর্তির তাৎপর্য বোঝে না এবং এর সঙ্গে মানিয়েও চলতে পারে না। নারীর রূঢ়তায় পুরুষ দিশাহারা হয়ে যায়। তার জীবন থেকে আনন্দ বিদায় নেয়। দেখতে দেখতে উভয়েই যৌবনের সায়াহ্নে পৌঁছে যায়-আসে বার্দ্ধক্য। শারীরিক ও মানসিক ভাবে উভয়েই দূ্র্বল হয়ে যায়। সবথেকে পুরোনো বন্ধু বলে, একে অপরকে মেনে নেয় তাদের উভয়ের নিরাপত্তার তাগিদে, আর হতাশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে যন্ত্রণা ভরা অতীত।ধরে থাকে একে ওপরের হাত।
       

Monday 11 May 2020

মনের মুখোশ...

মনের মুখোশ  

আর ভালো লাগছে না, অনেকদিন হলো বাড়ি বসে থাকা। মনটার মধ্যে যেন সবসময় একটা আনচান আনচান ভাব। রোজ সকাল থেকে শুরু করে  রাত অবধি হাড়ভাঙ্গা বিশ্রামএর এই কঠোর শাস্তি আর যেন নিতে পারছি না। কি করে এই রোজকার বিশ্রাম থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় , ভাবতে ভাবতে চোখ পড়লো আমার ৩৫০cc  এর পক্ষীরাজ এ। আর যেমন ভাবনা, তেমন কাজ ঠিক করলাম চলে যাবো একটা নির্জন সমুদ্র কিনারায়।  সেখানে গিয়ে কয়েকদিন শুধু প্রকৃতির শোভা দেখবো, মাছ ধরবো, ঠিক যেন "Discovery Channel".
                                                  
                ব্যাকপ্যাক সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম রাত ৩টের সময়, জানি অতো  রাতে পুলিশী ঝামেলায় পড়তে হবে না।  মন আমার আনন্দে ডগমগ। বেরোনোর সময় বাবা -মায়ের বারণ , আমার স্ত্রী কল্যাণীর মলিন মুখ আমার মেয়ে মিষ্টির শত অনিচ্ছা অগ্রাহ্য করে দিলাম Start আমার Royal  Enfield  এ।  এই ব্র্যান্ডটাই  এমন, এর ওপর বসলেই নিজেকে রাজা ছাড়া অন্যকিছু ভাবাই দুষ্কর।  ফার্স্ট গিয়ার্ , সেকেন্ড গিয়ার্ , একেবারেই ফিফ্থ গিয়ার্ এই চললাম আমি GPS  on করে পুরুষোত্তমপুর , দীঘার কাছেই। 
                   
                              সমস্ত টোলট্যাক্স গুলো কাটিয়ে ভেতরের রাস্তা ধরে চলেছি আমি , কোলাঘাটের কাছাকাছি এসে খুব মনে পড়ছিলো পরিবারের কথা, বন্ধুদের কথা, যতবার এসেছি বাজেট অনুযায়ী হয় শের-এ-পাঞ্জাব নাহলে অন্য কোনো রেস্টুরেন্ট এ নেবে দারুন জমিয়ে আড্ডা মেরে খাওয়া-দাওয়া করেছি। এই মুহূর্তে সেই উপায় নেই,ভাবতে ভাবতে সামনেই দেখি পুলিশ চেকপোস্ট  পুরো রাস্তা জুড়ে।  আমি কৃষ্ণনাম  জপা শুরু করলাম আর সবার মুখ গুলো যেন আমার চোখের সামনে পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইডের মতো এক এক করে চলে যাচ্ছিলো।  মিষ্টির সাথে মনে হয় আর দেখা হলো না, আমার বাড়ি ফেরা আর হলো না, কেনো কারোর কথা শুনলাম না।  

           গাড়ি রাস্তার পাশে দাঁড় করানো হলো।  আমাকে নামতে বলা সত্ত্বেও আমি নানা কারণ দেখতে থাকলাম আর তোতলাতে থাকলাম।পুলিশটি বার বার বলা সত্ত্বেও আমার আচরণের জন্য আমার জামার কলার ধরে হিচড়ে নামিয়ে বলছে ..... "কি হলো পাপা, তুমি যে বলেছিলে সকালে উঠে আমাকে নিয়ে ফুটবল খেলবে.....!!" আমি চোখ খুললাম, হাসলাম, ভাবলামার কয়েকদিন না হয় নিজের ডানা দুটো গুটিয়ে রাখাই শ্রেয়। এক গাল  হাসলাম,  বললাম চল মা , ফুটবল খেলি।  

Andhokosh

অন্ডকোষ 

এ এক দারুন অভিজ্ঞতা। তার ভিত্তিতেই আর একবার লেখার প্রয়াস। মাননীয় পাঠিকা ও পাঠক গনের কাছে নিবেদন কিছু ভুল হলে মার্জনা করে দেবেন। বয়স হলো প্রায় ৪০ বছর, কিন্তু ব্যক্তিত্ব এর কথা যদি বলা যায় তবে আমার সাহবাসীরা বলেন আমার বয়স ১০ বছর এর  সমান। কারন স্বরূপ, বয়স বারবার সাথে সাথে যে সাধারণ গুণগুলি মানুষের মধ্যে অসাধারন ভাবে প্রকট হওয়া উচিত সেগুলো আমার মধ্যে খুব কম ভোল্টেজ এ জ্বলা বাল্বের ফিলামেন্ট এর মতো টিম টিম করে অথবা ডাম্প ধরা দেশলাই এর বারুদের মতো ফুস করে জ্বলে আবার নিভে যায়. ফল স্বরূপ শুধুই খানিকটা ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধ।
            সামাজিক ভাবে দেখা গেলে জানা যাবে (১.) ধন , (২.) ব্যক্তিত্ব ও গাম্ভীর্য, (৩.) আত্মকেন্দ্রীকতা। থুড়ি, আত্মকেন্দ্রিকতা বললে বলা ভুল হবে, এটা অনেকটা নিজের কথা ভাবার জন্য অনেকটা যত্ন করে সময় তুলে রাখার মতো সাহস ও ইচ্ছা। তবে হ্যাঁ, এই সমস্ত গুনগুলির  মধ্যে কিন্তু কেন্দ্রীয় চরিত্র কেবল মাত্র গুন্ নং ১. অর্থাৎ কিনা "ধন". এটা অনেকটা রাসায়নিক বিক্রিয়ার অনুঘটক এর মতো কাজ করে. এই ১ নং গুনের ওপর ভিত্তি করে পিতা -মাতাও তাঁদের ভালোবাসার লাটাই এর সুতো সন্তানের দিকে বাড়ান বা কমান অথবা কখনো বা ভোকাট্টা করে দেন.
              একজন ধনশালী মানুষ যদি সমাজের জন্য ভাবেন তবে তিনি বিশিষ্ঠ "সমাজসেবী" আখ্যাতে ভূষিত হন এবং এটাই "সামাজিক". কিন্তু একজন ধেড়ে, বেকার যদি এই সমাজসেবার কাজটার জন্যই এগিয়ে যাই নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে নিয়োগ করে তবে সে "ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াচ্ছে" বলে ভূষিত হয়.
     অভিজ্ঞাতা বলে, ব্যক্তিগত ভাবে তার পরিবারের তুলনায় তুলনামূলক আর্থিক কম সাচ্ছন্দ কোনো পুরুষ যদি পিতা হন তবে তার সন্তান কেও সঠিক শিক্ষা দেবার জন্য পরিবার এর বাকিদের "Proper-Channel" এ যেতে হয়, নাহলে পিতার "Actual-Condition" সন্তানের নিকট প্রকট হবার চরম সম্ভাবনা ক্রমশ বলশালী হয়ে আছড়ে পড়ে . ঠিক যেন ঘূর্ণিঝড়। সন্তান ও তখন  তার কাকুর গাড়ি, জেঠুর বাড়ি, দাদুর অমুক ঠাকুমার তমুক ইত্যাদি জিনিসের উদাহরণ এর বন্যা বইয়ে দেয়,. তাই সাবধান।
       এখন হয়তো শ্রদ্ধেয় পাঠিকা ও পাঠক এই রচনার নামের তাৎপর্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন. তাই উপসংহারএ এসে ,বলি Biologically একজন পরিপক্ক "অন্ডকোষ" এর অধিকারী পুরুষ -ই কেবল পিতা হতে পারেন কিন্তু "বাস্তবically" একজন  সুঠাম "অন্ডকোষ"-এর অধিকারী তিনিই যাঁর কাছে "ধন " আছে........ স্বামী  প্রীতিশানন্দ

Monday 22 August 2016

O Jibon Re..

 "আসছে বছর আবার হবে" ... এই মন্ত্র বাঙালীর মনে-প্রাণে এতো প্রভাব ফেলেছে এ সেই সৃষ্টির আদি কাল থেকে যা তারা কখনো ভুলবে না...ভুলতে পারে না।  ছোট বেলায় পরীক্ষার   আগের দিন অব্দি রোজ নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করতাম, আজকের দিনটা যেমন গেলো গেলো, কাল থেকে এমন পড়াশুনা করবো এবার ফার্স্ট হবোই, ফার্স্ট না হতে পারলেও প্রথম ১০ জনের মধ্যে  অবশ্যই থাকবো।   কিন্তু "কাল" কে   সময়টা আসলই না।  কি আশ্চর্য ভাবে দিন গুলো কেটে যেত তারপর পরীক্ষার আগেরদিন শুরু হতো আমার খেয়ে না খেয়ে মা সরস্বতীর আরাধনা।  মনে মনে মা কে ডেকে বলতাম মাগো এই বছরতা কোনো ভাবে উৎরে দাও গো মা.... পরের বছর থেকে তোমাকে আর অসম্মান করবো না...মাগো। সুখের কথা এই যে ওই সময় যে পাচন পানা   মুখ করে মা কে ডাকতাম, মা সরস্বতী অসহ্য হয়েই আমাকে পাশ করা ছেলেদের মধ্যে একজন করে দিতেন।স্কুল-কলেজ গুলো এইভাবে মায়ের কৃপাধন্য পুত্র হয়ে কাটিয়ে ফেলে, মনে এক অসাধারণ আত্মবিশ্বাস কিলবিল কিলবিল করতো।   "আসছে বছর আবার হবেই "....